প্রাক্তন


সুরচিতা দাস 


আজ তাকে দেখলেম নদীর পাড়ে,

হাত নেড়ে ডাকছিলে কাওকে।

পড়ন্ত বিকেলের গোধূলি আভা জলে পড়তেই বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল চারিদিক।

পেছন থেকে তার দিকে এগিয়ে যেতেই দেখলেম, 

এক অপরূপা এসে তার হাতটা ধরলে।

আমি আর এগোলেম না।

বোধহয় এগোনোর সাহস পেলেম না।

পেছন ফিরতেই ক্ষণিক থমকে গেল সে ,

তার চোখে চোখ পড়তেই হতভম্ব দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেম আমিও।

থমকে গেল আমার সমস্ত পৃথিবীটা,

এক সময়ের কাছের মানুষকে দেখলেম দূরত্বের সীমানা অতিক্রম করতে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ সেও আধুনিক।

মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলে, ভালো আছি কিনা,

আলাপ করালে তার হবু স্ত্রী এর সাথে।

আমি বললেম, খুব সুন্দর মানিয়েছে দুজনকে।

জানতে চাইলেম, পাঞ্জাবি পড়া ছেড়ে দিয়েছে কিনা।

জবাব পেলেম না।

ঠোঁটের কোণে হাসি দেখে বুঝলেম,

প্রয়োজন ছাড়া পাঞ্জাবি পড়া হয়না আর।

শেষবার দেখেছিলেম নীল পাঞ্জাবিতে, সম্পর্কের ইতি টানতে এসেছিলে সেদিন।

স্মৃতিতে ধরা দিল অনেক কিছু।

প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহন্তেই দুজনে আসতেম,

এই নদীর পাড়ে।

তার পরনে পাঞ্জাবি আর আমি সাজতেম শাড়ীতে।

তার হাতে হাত দিয়ে জলে পা ডুবিয়ে বসতেম ঘাটে।

কখনো বাদাম ভাজা কিনে আনতে, কখনো বা দু ' কাপ চা।

চুল বাঁধিনি কোনদিনই,

আমার এলো চুল কানের পাশে আঙুল দিয়ে সরিয়ে দিতে বড়ই ভালোবাসতে।

"আসছি" বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পথেই বোধ হল বাস্তবে ফিরে এলেম।

মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেম।

দুজনেই এগিয়ে গেলেম বিপরীত মুখের সম্মুখে,

অনেক প্রশ্ন নিয়ে মনে, উত্তরের অপেক্ষা না করে।।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন